এই জাত ১৮ মাসে ফুল থেকে নারকেল, ফল দেবে টানা ৮০ বছর
এই জাত ১৮ মাসে ফুল থেকে নারকেল, ফল দেবে টানা ৮০ বছর
মাত্র তিন বছরেই গাছে ধরেছে নারিকেল। তাও একটি/দুটি নয়, শত শত। খুলনার দৌলতপুর হর্টিকালচার সেন্টারে শোভা পাচ্ছে এ নারকেল গাছ ও চারা।আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, দ্রুত বর্ধনশীল খাটো জাতের এ নারকেল গাছে ১৮ মাসের মধ্যেই ফুল চলে আসে এবং তিন বছরের মাথায় ফল পরিপূর্ণ হতে শুরু করেদক্ষিণ অঞ্চলে ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করছে এই নারকেল গাছ। ভিয়েতনামের নারকেল গাছের এই প্রজাতির নাম ‘ডুয়া এক্সিম লু’। এ জাতটি আবার দু-ধরনের, সিয়াম গ্রিন কোকোনাট এবং সিয়াম ব্লু কোকোনাট।
সারা পৃথিবীতে এ পর্যন্ত দ্রুত নারকেল আসে-এমন জাতের যেসব গাছের উদ্ভাবন এবং চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে ভিয়েতনামের এই জাতটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই গাছ একটানা ৭০/৮০ বছর পর্যন্ত ফল দিতে পারে। স্বাদে-গন্ধে, আকার ও পুষ্টিমানে এটি অসাধারণ। এর পানি অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু। এছাড়া ভারতের ‘গঙ্গাবন্ধন’ জাতের নারকেল গাছেও দ্রুত ফল আসে।
জানা গেছে, ‘ডুয়া এক্সিম লু’ নারকেলের জাতটির আদি উৎপত্তি থাইল্যান্ডে যা ‘সিয়াম’ নামে পরিচিত। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য থাইল্যান্ডে এই জাতের নারকেল ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়সূত্র জানিয়েছে, এই খাটো জাতের হাইব্রিড নারকেল গাছের চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ নারকেল গাছ সনাতনী গাছের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ফল দেবে। গাছের উচ্চতা ২ থেকে ৪ ফুট হলেই ফল ধরা শুরু করে। মাটিতে ছুঁই ছুঁই এ নারকেল মাটিতে বসেই পাড়া যাবে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু এই গাছ সব ধরনের মাটিতে চাষের উপযোগী। এ চারা পরিচর্যা করা সহজ। ঝড়ে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কম ক্ষতি হয়।
সূত্র জানিয়েছে, ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’-এর মাধ্যমে উন্নত জাতের এ নারকেলের জাতটি দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সরকার দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলাগুলোর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করছে। এ সব এলাকা নারিকেল চাষের জন্য অতি অনুকূল।
ভিয়েতনাম থেকে (ওপি) খাটো ও উন্নত জাতের নারিকেল চারা এবং ভারতের ক্যারালা ডোয়ার্ফ চারা এনে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ব্যাপক সম্প্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হর্টিক্যালচার দৌলতপুরের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মন্ডল, উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান এবং উদ্যানতত্ব বিদ এস. এম. এনামুল ইসলাম জানান, ভিয়েতনাম এবং ভারত দুই দেশ থেকে খাটো দুই জাতের নারকেলের চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ডাব হিসাবে ব্যবহারের জন্য অতি জনপ্রিয়। এ জাতের রং সবুজ, আকার কিছুটা ছোট, প্রতিটির ওজন ১.২-১.৫ কেজি।bdjournal
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
×
হোম
বাংলাদেশ
তিন বছরেই নারিকেল গাছে ফলন
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০১৯, ১৩:০৮
facebook sharing buttontwitter sharing buttonmessenger sharing buttonemail sharing buttonsharethis sharing button
মাত্র তিন বছরেই গাছে ধরেছে নারিকেল। তাও একটি/দুটি নয়, শত শত। খুলনার দৌলতপুর হর্টিকালচার সেন্টারে শোভা পাচ্ছে এ নারকেল গাছ ও চারা।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, দ্রুত বর্ধনশীল খাটো জাতের এ নারকেল গাছে ১৮ মাসের মধ্যেই ফুল চলে আসে এবং তিন বছরের মাথায় ফল পরিপূর্ণ হতে শুরু করে।
হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো আনন্দ শোভাযাত্রা
দক্ষিণ অঞ্চলে ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করছে এই নারকেল গাছ। ভিয়েতনামের নারকেল গাছের এই প্রজাতির নাম ‘ডুয়া এক্সিম লু’। এ জাতটি আবার দু-ধরনের, সিয়াম গ্রিন কোকোনাট এবং সিয়াম ব্লু কোকোনাট।
সারা পৃথিবীতে এ পর্যন্ত দ্রুত নারকেল আসে-এমন জাতের যেসব গাছের উদ্ভাবন এবং চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে ভিয়েতনামের এই জাতটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই গাছ একটানা ৭০/৮০ বছর পর্যন্ত ফল দিতে পারে। স্বাদে-গন্ধে, আকার ও পুষ্টিমানে এটি অসাধারণ। এর পানি অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু। এছাড়া ভারতের ‘গঙ্গাবন্ধন’ জাতের নারকেল গাছেও দ্রুত ফল আসে।
জানা গেছে, ‘ডুয়া এক্সিম লু’ নারকেলের জাতটির আদি উৎপত্তি থাইল্যান্ডে যা ‘সিয়াম’ নামে পরিচিত। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য থাইল্যান্ডে এই জাতের নারকেল ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়সূত্র জানিয়েছে, এই খাটো জাতের হাইব্রিড নারকেল গাছের চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ নারকেল গাছ সনাতনী গাছের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ফল দেবে। গাছের উচ্চতা ২ থেকে ৪ ফুট হলেই ফল ধরা শুরু করে। মাটিতে ছুঁই ছুঁই এ নারকেল মাটিতে বসেই পাড়া যাবে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু এই গাছ সব ধরনের মাটিতে চাষের উপযোগী। এ চারা পরিচর্যা করা সহজ। ঝড়ে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কম ক্ষতি হয়।
সূত্র জানিয়েছে, ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’-এর মাধ্যমে উন্নত জাতের এ নারকেলের জাতটি দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সরকার দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলাগুলোর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করছে। এ সব এলাকা নারিকেল চাষের জন্য অতি অনুকূল।
ভিয়েতনাম থেকে (ওপি) খাটো ও উন্নত জাতের নারিকেল চারা এবং ভারতের ক্যারালা ডোয়ার্ফ চারা এনে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ব্যাপক সম্প্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হর্টিক্যালচার দৌলতপুরের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মন্ডল, উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান এবং উদ্যানতত্ব বিদ এস. এম. এনামুল ইসলাম জানান, ভিয়েতনাম এবং ভারত দুই দেশ থেকে খাটো দুই জাতের নারকেলের চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ডাব হিসাবে ব্যবহারের জন্য অতি জনপ্রিয়। এ জাতের রং সবুজ, আকার কিছুটা ছোট, প্রতিটির ওজন ১.২-১.৫ কেজি।
ডাবে পানির পরিমাণ ২৫০-৩০০ মিলি। গাছ প্রতি বছরে ফল ধরে ১৫০-২০০ টি এবং সিয়াম ব্লু কোকোনাটও অতি জনপ্রিয় জাত, এটা ২০০৫ সালে উদ্ভাবন করা হয়। এটা কৃষকের খুব পছন্দের জাত। চারা রোপণের আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল ধরে, ফলের রং হলুদ, ওজন ১.২-১.৫ কেজি, ডাবের পানির পরিমান ২৫০-৩০০ মিলি। ডাবের পানি অতি মিষ্টি হওয়ার কারণে এ জাতের ডাব বিদেশে রপ্তানি করা যায়। গাছ প্রতি বছরে ফলে ধরে ১৫০-২০০ টি।
প্রায় সব ধরনের মাটি নারিকেল চাষের জন্য উপযোগী। তবে অতি শক্ত, কাঁকর শিলাময় মাটি হলে প্রায় দেড় মিটার চওড়া ও দেড় মিটার গভীর করে গর্ত তৈরী গর্তটি জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ উপরিভাগের মাটি ও সার দিয়ে ভরাট করে গাছ লাগালে গাচ সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে এবং শুকনো মৌসুমে সেচের সুবিধা থাকলে অথবা বসতবাড়িতে সারা বছরই রোপণ করা হবে। চারা রোপণের পর প্রতি তিন মাস পর পর সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম হারে ম্যানকোজের গ্রুপের রোগনাশক মিশেয়ে আক্রান্ত ফলে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।কর্মকর্তারা আরো জানান, মোবাইল টাওয়ারের কারণ ডাব/নারিকেলের খসখসে বাদামি এবং খয়েরি দাগ ফলন কমে যাচ্ছে কথাটি সত্য নয়। এক ধরনের ক্ষুদ্র মাকড়ের (মাইট) কারণে এটা হয় যার ফলে নারিকেলের আকার ছোট ও শাঁস পাতলা হয়। নারিকেলের মাইট দমনে কোনো তাজা পাতা না কেটে গাছ পরিষ্কার করে পারজাইট গ্রুপের ভার্টিমেক/ওমাইট ৪.৫ মি.লি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের মাথায় স্প্রে করতে হবে। এছাড়া নারিকেলের ৩/৪ টি তাজা শিকড় কেটে ভার্টিমেক/ওমাইট ৪.৫ মি.লি প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের মাথায স্প্রে করতে হবে।
এছাড়া নারিকেলের ৩/৪ টি তাজা শিকড় কেটে ভার্টিমেক/ওমাইট মিশ্রিত বোতলে ডুবিয়ে মাটি দ্বারা ঢেকে রেখে দিলেও কার্যকরভাবে নারিকেলের মাইট দমন করা যায়।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে
Comments
Post a Comment